পূর্ব-পশ্চিম

Sayak Biswas, 16MS

29/09/2019

“জার্মান জাতির স্মৃতি বড়োই দুর্বল” – মেনসায় বসে বলল মিশেল। “বারো বছর ধরে আমরা নাৎসিবাদের উত্তাল তরঙ্গে চেপে বিশ্বজয়ের স্বপ্ন দেখেছি। পরাজয়ের গ্লানিতে তা এক লহমায় বিলীন হয়। এরপর দেশভাগ। হঠাৎ একই শহরের সহনাগরিক একে অপরের বৈরী হয়ে উঠল। আগের দিন অবধি যারা একসাথে সৎকার করল যুদ্ধে নিহত আপনজনের দেহ, তারাই আজ হয়ে উঠল একে অপরের শ্রেণীশত্রু। যন্ত্রণা তীব্রতর করল দ্বিখণ্ডিত শহরের বুক চিরে চলে যাওয়া দেওয়াল। জনরোষ যত, সেই দেওয়ালের উপর, জমতে থাকে অল্প অল্প করে। একদিন আর বাঁধ মানল না। একদল ভেঙে গুঁড়িয়ে দিল সেই অবরোধ। বিশ্বদরবারে সি এন এন জানান দিল ঠাণ্ডা যুদ্ধের অবসান। পূর্ব-পশ্চিম জার্মানির পুনর্মিলন। যে পথে পূর্ব ইউরোপকে নাৎসিবাদের থাবা থেকে মুক্ত করেছিল লাল ফৌজ, সেই পথেই পিছু হঠল কমিউনিজম। অবশেষে পতন ঘটল সোভিয়েত ইউনিয়নের। ডিসেম্বর ১৯৯১। কিন্তু এই সব আমরা খুব তাড়াতাড়িই ভুলে গেছি। আমাদের স্মৃতিশক্তির জবাব নেই!” মিশেল বন্ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিকালিস ইন্সটিটিউটের পি এইচ ডি ছাত্র।

বিগত শতাব্দী জুড়ে দ্বন্দ্বের প্রাণকেন্দ্রে থেকেছে জার্মানি। জার্মানদের পিতৃভূমি ডয়েশল্যান্ড যেন বিশ্বব্যাপী চলা ধর্মযুদ্ধের কুরুক্ষেত্র। কখনও যুযুধান দুই পক্ষ সম্মুখ সমরে অবতীর্ণ। কখনও তাদের হাতে নতুন অস্ত্র, কূটনীতি। চলে ইতিহাস বিখ্যাত ঠাণ্ডা যুদ্ধ, প্রায় চার দশক ধরে। এই সবের মাঝেই চির শাশ্বত একটি নাম, কার্ল মার্ক্স। জার্মান সন্তান হয়েও যিনি সার্বজনীন। বারংবার তাকে চিন্তাবিদরা ব্যাখ্যা করেছেন নিজ নিজ ঘরানায়। এই মহাভারতে তিনি এক পক্ষের কাছে মুরারীমোহন শ্রীকৃষ্ণ হলে অন্য পক্ষের চোখে মামা শকুনি। নাকি তিনি এই সবের ঊর্ধ্বে কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাসের মতো? জার্মানি এসে, পৃথিবীর সবচেয়ে চর্চিত এই দার্শনিক, সমাজবিজ্ঞানী, অর্থনীতিবিদের জন্মস্থানে সশরীরে উপস্থিত থাকার লোভ আর সংবরণ করতে পারলাম না।

বন্ থেকে চাপলাম ডয়েশবাহন-এ। কোবলেঞ্জ স্টেশনে ট্রেন পাল্টে পৌঁছলাম ট্রিয়র হউপ্তবাহনহফ। এই শহরেই মার্ক্সের জন্ম। এখানেই তাঁর জীবনের প্রথম ১৮ বছর অতিবাহিত হয়। ট্রিয়র, রাইনল্যান্ড তথা জার্মানির অন্যতম প্রাচীন শহর। ইতিহাসের প্রতিটি অধ্যায় তাদের পদচিহ্ন রেখে গেছে দেশের পশ্চিমপ্রান্তে, রাইনের শাখানদী মেসেলের তীরে অবস্থিত ছোট্ট এই জনপদে।

হউপ্তবাহনহফের ট্যুরিস্ট ইনফরমেশন সেন্টারে জিজ্ঞাসা করতেই তারা বাতলে দিল আমার গন্তব্য কার্ল মার্ক্স হউস্-এর পথ। হাতে ধরিয়ে দিল শহরের মানচিত্র। ভাঙা ভাঙা ইংরাজিতে শোনা দিকনির্দেশ ও হাতের মানচিত্র অনুসরণ করেই হাঁটতে লাগলাম ট্রিয়রের রাজপথে। বিগত কিছুদিন তাপপ্রবাহে জর্জরিত ছিল গোটা ইউরোপ মহাদেশ। অকল্পনীয় চল্লিশ ডিগ্রি কাবু করেছিল শীতপ্রধান দেশের আবাসিকদের। কিন্তু আজ, আবহাওয়া তার সাধারণ নিয়মে ফেরায় স্বচ্ছন্দে পায়ে হেঁটে ঘোরা যাচ্ছে রাস্তায়।

হউপ্তবাহনহফ থেকে নাক বরাবর হাঁটলেই রোমানদের তৈরি তোরণ, পোর্টা নির্গা স্বাগত জানায় শহরের কেন্দ্রবিন্দুতে। দেশ বিদেশ থেকে আসা পর্যটকদের সেলফি গ্রুপফির কাকলিতে মত্ত এই প্রাঙ্গণ। কিন্তু জনসমাগম ও তাদের উৎসাহ যে এখানেই আবদ্ধ, তা নয়। অনতিদূরে একটি বেদীর উপর রাখা বাদামী রঙের মূর্তিও টানছে ভিড়। ২০১৮ তে, মার্ক্সের জন্মের ২০০ বছর উপলক্ষে ট্রিয়রবাসীকে চীন সরকারের উপহার মার্ক্সের এই মূর্তি। পোস্টারে দেখা পরিচিত সেই মুখ। দৃপ্ত তার ভঙ্গী।

প্রাচীনত্বের স্বাদ, ঐতিহ্যকে অক্ষুণ্ণ রেখেই ঝাঁ-চকচকে সুপারমার্কেট, শপিং মল মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। প্রাচীন ও নবীনের এই সহাবস্থান সম্ভব হয়েছে এদের নান্দনিক বোধের জন্য।

এক জায়গায় এখানকার বাম পার্টি ডাই লিঙ্কের পোস্টার দেখে দাঁড়ালাম। জার্মানে লেখা, বোঝার উপায় নেই। আসলে এই দেশে এসেছি ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনের মরসুমে। ব্রাসেলসে অবস্থিত ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইনসভার জন্য জনপ্রতিনিধি চয়ন এই প্রক্রিয়ার লক্ষ্য। ভোটযুদ্ধে দক্ষিণপন্থী সি ডি ইউ-সি এস ইউ-কে টক্কর দিচ্ছে মধ্য বাম এস পি ডি (সোশ্যালিস্ট ডেমোক্র্যাটিক পার্টি অফ জার্মানি) আর বাম দল ডাই লিঙ্ক। দৌড়ে রয়েছে পরিবেশ সচেতন গ্রিন পার্টি ও এফ ডি পি।

আসলে জার্মানিতে বামপন্থার ঐতিহ্য বহুদিনের। ঊনবিংশ শতাব্দীর শ্রমিক আন্দোলনের ফলশ্রুতি, জেনেরাল জার্মান ওয়ার্কার্স অ্যাসোসিয়েশন ও সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক ওয়ার্কার্স পার্টির সংযোজনে গঠিত হয় পৃথিবীর সর্বপ্রথম সোশ্যালিস্ট পার্টিগুলির মধ্যে অন্যতম, এস পি ডি, ১৮৭৫ সালে। ১৮৯০ পরবর্তী সময়ে তাদের জনপ্রিয়তাও পৌঁছয় তুঙ্গে। কিন্তু আসন্ন প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পার্টির অন্দরে আনে ফাটল। আন্তর্জাতিক শ্রমমুক্তি মঞ্চ, সেকন্ড ইন্টারন্যাশনালের সিদ্ধান্ত অমান্য করে ১৯১২ সালে রাইখস্ট্যাগে, মুখে মার্ক্সবাদী বুলি আওড়ানো এস পি ডি সদস্যরা ভোট দেয় সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধের পক্ষে, জাতীয়তাবাদের দোহাই দেখিয়ে। তাদের এহেন অবস্থানে হতবাক হন স্বয়ং লেনিন! ভেকধারী সমাজতন্ত্রীদের উপর আস্থা হারান যুদ্ধের আপসহীন বিরোধী কার্ল লীবনেখট, রোজা লুক্সেমবার্গের মতো এস পি ডি নেতারা। ১৯১৮ সালে, জার্মানিব্যাপী উত্তাল গণআন্দোলনের আবহে তাঁরা গঠন করেন কমিউনিস্ট পার্টি অফ জার্মানি। তাঁদের আনুগত্য লেনিন নেতৃত্বাধীন কমিণ্টার্ণের প্রতি। তাঁরা ডাক দেন গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সমাজবদলের। সেদিন থেকেই সোশ্যালিস্ট ও কমিউনিস্টদের মধ্যে রেষারেষি চরমে। উভয়েরই দাবী, তারাই প্রকৃত মার্ক্সবাদী।

সালটা ১৯১৯। যুদ্ধ শেষ। জার্মানদের রাজনৈতিক ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়। এই সময়ের ঘটনাপ্রবাহই আখেরে পৃথিবীকে ঠেলে দেবে আরেকটা মহাযুদ্ধের দিকে। কিন্তু সে এখন দূরস্থ। কিন্তু আপাতত যুদ্ধ শেষে শ্রমিক মহল্লায় উদ্দীপনা তুঙ্গে। তারা মনে করছে সোভিয়েতের দেখানো পথেই তাদের মোক্ষলাভ। কিছু ভুলভ্রান্তি ও বিপ্লবের ঘোর বিরোধী ক্ষমতাসীন এস পি ডি সরকার তাতে বাধ সাধল। নির্মমভাবে দমন করা হল সেই একপ্রকার স্বতঃস্ফূর্ত অভ্যুত্থানকে। গ্রেপ্তার হলেন রোজা লুক্সেমবার্গ, কার্ল লীবনেখটরা। পরে তাঁদের হত্যা করা হল।

লুক্সেমবার্গ ছিলেন স্বাধীন চিন্তাভাবনায় সক্ষম। একাধারে তিনি যেমন তীব্র আক্রমণ হেনেছেন মুখোশধারী সমাজবাদী এস পি ডি-র উপর, তেমনই সমালোচনা করেছেন বহু লেনিনীয় নীতিরও। তাঁর অবর্তমানে অন্তর্কলহ ও সোভিয়েতিকরণ ক্রমে দুর্বল করে দেয় কমিউনিস্ট পার্টি অফ জার্মানিকে। ওদিকে কমিউনিস্ট ও সোশ্যালিস্টদের এই কোন্দলের সুযোগ নিয়ে শাসনক্ষমতা দখল করে ন্যাশনাল সোশ্যালিস্ট ওরফে নাৎসিরা। প্রথমেই আঘাত নেমে আসে কমিউনিস্টদের উপর। ইহুদী সন্তান কার্ল মার্ক্সের অনুগামীদের খতম করো – ডাক দেন হিটলার! একে একে এস পি ডি ও অন্যান্য বুর্জোয়া পার্টিগুলিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।

১৯৪৫-এর মে মাস। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসানে নাৎসিবাদের আত্মসমর্পণ। মিত্রশক্তি কেকের ফালির মতো ভাগ করে নিয়েছে জার্মান ভূখণ্ড। পূর্বে, সোভিয়েত অধিগৃহীত অঞ্চল। পশ্চিমের অংশে থাবা বসিয়েছে তিন দেশ – আমেরিকা, ফ্রান্স ও ব্রিটেন। বহুযুগ গোপনে থাকার পর মাথাচাড়া দিল সাবেক গণতান্ত্রিক পার্টিগুলি। পূর্বে, সোভিয়েত তত্ত্বাবধানে, দু’পক্ষের, বিশেষত সোশ্যালিস্টদের আপত্তি একপ্রকার উপেক্ষা করে পুনর্মিলন ঘটানো হল এস পি ডি ও কমিউনিস্ট পার্টির। সৃষ্টি হল পরবর্তীকালে পূর্ব জার্মানি ওরফে জার্মান ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক (জি ডি আর)-এর শাসক দল, সোশ্যালিস্ট ইউনিটি পার্টি (এস ই ডি)-র।

প্রায় চার বছর মিত্রশক্তির অধীনে কাটায় জার্মানরা। ১৯৪৯ সালে ফ্রান্স, আমেরিকা ও ব্রিটেন অধিগৃহীত অঞ্চল মিলিয়ে তৈরি হয় ফেডেরাল রিপাবলিক অফ জার্মানি, প্রচলিত পরিভাষায় পশ্চিম জার্মানি। রাজধানী বন্-এ গৃহীত সংবিধানে নিজেদের পশ্চিমী উদার গণতন্ত্র হিসেবে ঘোষণা করে তারা। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মার্কিন মদতে ক্রমে ফুলে ফেঁপে ওঠে তারা। ব্যবহারিক দ্রব্যসামগ্রী উৎপাদনে জোর দেয় সোশ্যাল মার্কেট অর্থনীতির প্রবক্তা, কনর‍্যাড অ্যাডনিয়ার সি ডি ইউ সরকার। দ্রুত চাঙ্গা হয়ে ওঠে যুদ্ধে কাবু অর্থনীতি।

ওদিকে, চেক পয়েন্ট চার্লি-র ওপারের বাসিন্দারা ১৯৪৯ সালেই গা ভাসিয়েছেন সোভিয়েতিয়ানায়। নিজের পায়ে, সমাজতান্ত্রিক পথ ধরে প্রতিষ্ঠিত হতে তারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ইস্পাত ও ভারি শিল্প অগ্রাধিকার পায় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায়, অথচ সরকারী দোকানঘরে হয়তো বা কখনও ব্যবহারিক দ্রব্যের ঘাটতি। আবার সোভিয়েতকে তাদের দিয়ে যেতে হচ্ছে যুদ্ধের জন্য ক্ষতিপূরণ। একটা ভগ্নপ্রায় দেশ ও জাতিকে পুনর্গঠনের দায়িত্ব তো রয়েছেই। এসবের মধ্যে সমাজতন্ত্র নির্মাণ অতীব কঠিন কাজ। তাই আপাতভাবে ব্যর্থতাও এসেছে বারংবার। পূর্বের সেই ছাপোষা লোকটি, যে জানে না অত শত মার্ক্সীয় লেনিনীয় তত্ত্বের কচকচানি, তার কাছে যখন ভেসে আসে পশ্চিমের আপাত অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্যের সুবাস, সে উপেক্ষা করতে পারেনা সেই হাতছানি। পরিস্থিতির অবনতি হয় যখন দেশত্যাগ আটকাতে মরিয়া সরকার, পলায়নরত সেই লোকটিকে দাগিয়ে দেয় শ্রেণীশত্রু বলে। কখনও বা বুলেটের ঘায়ে তাকে মরতে হয় বার্লিনের প্রাচীরে।

বর্তমানে দাঁড়িয়ে, ‘মুক্ত’ বিশ্বের ‘মুক্তিদূত’-দের কাছে আজ অবলুপ্ত জি ডি আর সম্পর্কে এরকম বহু কেচ্ছা শোনাই যায়। হয়তো তার অধিকাংশই সত্য। প্রশ্ন উঠতেই পারে, সোভিয়েতি মার্ক্সবাদের বজ্রআঁটুনিতে কি হারিয়ে গেছিল আসল লক্ষ্য – মানুষের জীবনের স্বাচ্ছন্দ্য? কিন্তু একতরফা ইতিহাস ব্যাখ্যা অনুচিত। মাত্র চল্লিশ বছরে, এত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও জি ডি আর-এর সাফল্যের তালিকাও কম বড়ো নয় – সবার জন্য সুনিশ্চিত কাজ, বার্ধক্যভাতা, বিশেষ করে মাতৃত্বকালীন সুযোগসুবিধা, যার কথা আজও ভুলতে পারেন না একদা জি ডি আর-এর বাসিন্দারা।

ওদিকে ফেডেরাল রিপাবলিকের প্রাথমিক পর্বে এস পি ডি ও কমিউনিস্টরা তাদের স্বতন্ত্র অবস্থান বজায় রাখে। ১৯৫৫ সালে পশ্চিম জার্মানি ন্যাটো অন্তর্ভুক্ত হয়। সেই বছরই ওয়ারস প্যাক্টের অংশী হয় পূর্ব জার্মানি। বলা যায়, এক প্রকার আনুষ্ঠানিকভাবে ঠাণ্ডা যুদ্ধের সূচনা হয়। সেই বছরই, জাতীয় নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে পশ্চিমের সরকার সেখানে নিষিদ্ধ করে কমিউনিস্ট পার্টি অফ জার্মানি (কে পি ডি)-কে। পূর্ব জার্মানির প্রাণপুরুষ কার্ল মার্ক্সকেই তাদের বিরুদ্ধে হাতিয়ার করেছে পশ্চিমের এস পি ডি। তাঁর মৃত্যুর এক শতক অতিক্রান্ত হলেও তাঁর প্রসূত চিন্তাভাণ্ডারের দখল পেতে যখন প্রতিযোগিতায় চরমপন্থী থেকে নরমপন্থীরা, তখন প্রশ্ন ওঠে, কতটা সমাদর পেয়েছেন এই চিন্তানায়ক তাঁর জীবদ্দশায়? উত্তর পেতে তাঁর জীবন অনুসরণ করে বিচরণ করা প্রয়োজন ইতিহাসের নিভৃত অলিন্দে।